বিবর্তন রিপোর্ট : কুমিল্লায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে এক নারীসহ ৭ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
প্রতারণার সময় আটকরা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় দেয়। তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য ব্যবহৃত ভুক্তভোগীর স্বাক্ষরিত সাতটি অলিখিত স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষরিত সাতটি খালি ব্যাংক চেক উদ্ধার করে পুলিশ।
৪ মে শনিবার কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন সময়ে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
গ্রেফতার প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলো- ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া সৈয়দ অয়াত উল্যাহ ও ইমরান হোসেন, ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দেয়া মো. মোজাম্মেল হক, চাঁদা আদায়কারী মো. সাখাওয়াত হোসেন, গোপন ভিডিও ধারণ পরিকল্পনাকারী আব্দুর রহিম, ফাঁদে ফেলার বাসার মালিক মোহাম্মদ কোভিদ হোসেন ও পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তাসনুভা আক্তার।
পুলিশ সুপার জানান, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার এলাকার এক ব্যক্তিকে মোবাইল ফোনে কল করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ২৩ বছর বয়সী নারী মাস্টার মাইন্ড তাসনুভা আক্তার। ঘটনার দিন গত ১৩ জানুয়ারী পরিকল্পনা করে ওই ব্যক্তিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার বালুতোপা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে ঐ দিনে বিকেল ৩ টায় শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও চিত্র ধারণ করে। চিত্র ধারনের পর ভয় দেখিয়ে ভিক্টিম আবদুল মমিন(৬০) এর কাছ থেকে ঐ মূহুর্তে প্রতারক চক্র নগদ ৩০ হাজার টাকা আদায় করে এবং সাথে স্বাক্ষরিত ৭ টি চেক সহ একটি খালি স্ট্যাম্প নেয়।দুদিন পর আরো ২ লাখ আদায় করে। পরবর্তীতে চক্রটি মমিনের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করলে নগদে- বিকাশে ভিক্টিম মমিন ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা চক্রের হাতে পৌঁছায়। এসব ঘটনাক্রমে আবদুল মমিনের ছেলে ফখরুল ইসলাম ( ২১) জানতে পারলে সে বিষয়টি মৌখিক ভাবে পুলিশ কে জানায়। পরে ২ মে ফখরুল পুলিশকে লিখিত ভাবে জানায়। প্রাথমিক তদন্তশেষে গত ৩ মে মমিনের ছেলে ফখরুল ইসলাম বাদী এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করে।
এ ভাবেই ঘটনাস্থল থেকে শুরু করে ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখিয়ে শুরু হয় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের কৌশল। আর এভাবেই চক্রটি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে।
এরপর প্রতারণার ভিডিও ছেলের মোবাইলে পাঠিয়ে মোটা অঙ্কেরর চাঁদা দাবি করে প্রতারক চক্র। সম্মানহানির কথা চিন্তা করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রতারক চক্রকে ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়। পরে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় এই প্রতারক চক্রটিকে।