স্টাফ রিপোর্টার।।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লার দুই উপজেলা দেবীদ্বারে মা-মেয়ে ও বুড়িচংয়ে দুই ভাইয়ের নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে। ভোটের মাঠে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছেন না। প্রত্যেকেই ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস।
দেবিদ্বার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থীসহ মোট ৮ প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন- কুমিল্লার-৪ আসনের স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই জেলা যুবলীগ নেতা মো. মামুনুর রশিদ (আনারস প্রতীক)। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব রোশন আলী মাস্টারের স্ত্রী শাহিদা আক্তার (ঘোড়া প্রতীক) ও মেয়ে খাদিজা বিনতে রোশন (দোয়াত কলম প্রতীক)।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার বলেন, একসঙ্গে মা-মেয়ের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ‘কৌশল’। দলে তার অনেক ত্যাগ আছে। তাই সুষ্ঠু ভোট হলে আমার (শাহিদা) স্ত্রী বিজয়ী হবেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ বলেন, আমার সাথে আওয়ামী লীগ ও সাধারণ ভোটাররাও আছেন। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আত্মবিশ্বাসী। আমাকে পরাজিত করার জন্য তারা মা-মেয়ে একসাথে মাঠে নেমেছে।
অন্যদিকে, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন আপন দুই ভাই। তারা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলাক হায়দার এবং উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য তারিক হায়দার। এছাড়া এ উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাছির খান নির্বাচন করছেন। একই দল থেকে চারজনের প্রার্থিতা নিয়ে দলের তৃণমূল বেকায়দায় আছেন বলে নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়।
বুড়িচংয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখলাক হায়দার ও তারিক হায়দারের বাবা মো. আবুল বাসার মুক্তিযুদ্ধের সময় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি আদর্শ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন তিনি। আবুল বাসারের বড় ছেলে আখলাক হায়দার প্রথমবার ১৯৮৮ সালে ও দ্বিতীয়বার ১৯৯৮ সালে একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন। ২০১৯ সালে তিনি বুড়িচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারও প্রার্থী হয়েছেন। এবার তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তারই আপন ভাই তারিক হায়দার। তারিক ২০১৬ সালে কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে জয়ী হন। ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই- এই বিষয়ে জানতে চাইলে দুই প্রার্থীই গণমাধ্যমকে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। বুড়িচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদের আরেক প্রার্থী বাছির খান বলেন, ভাইয়ে ভাইয়ে নির্বাচন করছেন তাদের নির্বাচনী কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করার জন্য।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রূপম মজুমদার জানান, ‘দলীয়ভাবে কোনো প্রতীক না থাকায়, নির্বাচনে যে কারোরই নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করার সুযোগ রয়েছে, এটাতে কোন ভাবেই ব্যতিক্রম তথ্য হিসেবে উপস্থাপন করার কিছুই নাই। উল্লেখ্য, ৩য় ধাপে কুমিল্লার তিন উপজেলা বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বারে আগামী ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনার ও জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।