৩ মে (সোমবার) দুপুরবেলা দু’টি দায়রা মামলায় প্রথম বারের মত ভার্চুয়েলি দু’জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ (ভারপ্রাপ্ত) নাসরিন জাহান।
আদালত সূত্রে জানা যায়- ২০১০ সালের ৮৯৬নং এবং ২০১১সালের ১০৭২নং দুটি দায়রা মামলার ভার্চূয়েলি সাক্ষ্য প্রদান করেছেন বাংলাদেশ সচিবালয় এর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এর উপসচিব (বাজেট) এ,ক,এম কামাল উদ্দিন।
তিনি তৎকালীন সময়ে কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় দুটি মামলার আসামি জিয়াউল হক এবং আসামি মোঃ নুরুল ইসলাম ও মোঃ খোরশেদ আলম এর দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। মামলা দুটি’র দূরবর্তী প্রন্তের সমন্বকারী ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (বিচার শাখা-০৪) এর সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ মাসুদ-উর রহমান।
মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০১০ সালের ৮৯৬নং মামলার আসামি মোঃ হাফিজ উদ্দিন আবুল হাসেম, জিয়াউর রহমান ও আজিজুল ফকির পরষ্পর যোগসাজশে ২০০৯ সালের ২১ ডিসেম্বর দিবাগত-রাত ৪টায় কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের মেসার্স চৌধুরী ফিলিং ষ্টেশনে প্রবেশ করে ভিকটিম নাছির উদ্দিনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পাম্পের ক্যাশবক্স হতে নগদ টাকা লুণ্ঠনসহ একটি মোবাইল সেট জোরপূর্বক ছিনিয় নেন।
এ ব্যাপারে পরদিন ২২ ডিসেম্বর পাম্পের ম্যানেজার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামের তনু মিয়ার পুত্র মোঃ নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দণ্ডবিধির ৩৯২ধারার বিধানমতে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ মনির হোসেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কড়ই কান্দির মৃত আবদুল রশিদ এর ছেলে আসামি জিয়াউর রহমান জিয়া ও একই উপজেলার কচুরী নোয়াপাড়া’র মৃত ইব্রাহিম এর ছেলে মোঃ হাসিম উদ্দিনকে গ্রেফতারপূর্বক আদালতে সোপর্দ করেন এবং ঘটনারমূল রহস্য উদঘাটন করিয়া মাদারীপুর সদর উপজেলাধীন সোনাপাড়া ফকির বাড়ীর মোঃ সাদেক ফকির এর ছেলে আসামি আজিজুল ইসলাম আজিজুল ফকির (২৭), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কড়ই কান্দির মৃত আবদুল রশিদ এর ছেলে আসামি জিয়াউর রহমান জিয়া (২৯) ও একই উপজেলার কচুরী নোয়াপাড়া’র মৃত ইব্রাহিম এর ছেলে মোঃ হাসিম উদ্দিন আবুল হাসেম (৩৬) এর বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৭ জুন দণ্ডবিধির বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। যাহা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
অপরদিকে, ২০১১সালের ১০৭২নং মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০১১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত-রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম বন্দর হতে পাকিস্তানি আমদানীকৃত ৬,১৩০.৬০ কেজি সুতা দি ভেনাস ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি কভার ভ্যান গাড়ী যোগে চালক মোঃ সবুজ হোসেন নিয়ে বি.টি.এল ইয়ান ষ্টোর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রি পার্ক গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। তৎপর ভ্যানগাড়ীটি যথাসময়ে যথাস্থানে না পৌছায় বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজির একপর্যায়ে ২০১১ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি দিবাগত-রাত ১১টায় অন্য ট্রান্সপোর্ট এর চালক বাহার এর মাধ্যমে জানতে পারেন দাউদকান্দি থানাধীন গৌরীপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশের চন্দ্রবান পেট্রোল পাম্পের উল্টো পাশে গাড়ীটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন গাড়ীটির ভেতরে অজ্ঞান অবস্থায় চালক সবুজ পড়ে আছে।
চালক সুস্থ হয়ে জানায় যে, অজ্ঞাতনামা ১০/১২জন ডাকাত কভার ভ্যানে উঠিয়া চালক ও হেলপার সুমনকে হাত পা বাঁধিয়া এলোপাথাড়ি মারপিট করে গাড়ীটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় এবং চালক সবুজকে জোরপূর্বক টাইগার এনার্জি ডিংক পান করান এবং আমদানিকৃত মালামাল গুলি ডাকাতি করিয়া নিয়া যায়। এ ব্যাপারে ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী দি ভেনাস ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মোঃ কুতুবউদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দণ্ডবিধির বিধানমতে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করিলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি মোঃ ইমন (২০), মোঃ নুরুল ইসলাম (২৮), মোঃ সুজন (২৭), মোঃ উজ্জ্বল (২৩), মোঃ কলিম উল্লাহ (২৩) ও মোঃ এনামুল হককে পরদিন এবং আসামি মোঃ খোরশেদ আলম সুমন (২৩) কে একই সালের ১০ মার্চ এবং আসামি মোঃ আবু জাফর দুলাল (৩৫) ও মোঃ আব্দুর রহিম (৩২) কে একই সালের একুশে মে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে ২০১১ সালের ৩০ মে চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বেবকোটা গ্রামের মৃত মোহর আলীর ছেলে আসামি মোঃ ইমন (২০), বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার মুন্সির তালনুক গ্রামের মৃত মোছলেম হাওলাদার এর ছেলে আসামি মোঃ নূরুল ইসলাম (২৮), কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার উজার খলা গ্রামের মোঃ আজমখানের ছেলে মোঃ সুজন (২৭) ও মোঃ উজ্জ্বল (২৩), নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামের মৃত খায়েজ উল্লার ছেলে মোঃ কলিম উল্লাহ (২৩), ভোলা লাল মোহন উপজেলার গাইমারা মৃত সুলতান আহমেদ মাষ্টার এর ছেলে মোঃ এনামুল হক (৩৫), লক্ষীপুর রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ ছেনায়তপুর গ্রামের মোঃ আবুল কালাম এর ছেলে মোঃ খোরশেদ আলম সুমন, কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মোঃ আবুল খায়ের এর ছেলে মোঃ আবু জাফর দুলাল (৩৫) ও চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার লালমাই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ এর ছেলে মোঃ আঃ রহিম এর নাম অন্তর্ভুক্ত করে দণ্ডবিধির বিধানমতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। যাহা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।