বিবর্তন রিপোর্টঃ
ট্রেনে উঠতে না দেয়ায় উপকূল এক্সপ্রেসের
স্টুয়ার্ডের দুই সদস্যের উপর হামলার করেছে হকাররা।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লা লাকসাম জংশনে পৌছালে এই ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের একজন যাত্রীসহ উপকূল এক্সপ্রেসের স্টুয়ার্ডের দুই সদস্য আহত হয়।
আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা লাকসাম জংশনের স্টেশন মাস্টার মো মাহবুবুর রহমান।
আহতরা হলেন উপকূল এক্সপ্রেসের স্টুয়ার্ড শামিম এবং স্টুয়ার্ড রাহুল। এবং ট্রেনের বগিতে (২৪ নাম্বার) সিটে অন্তর নামে একজন যাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেস সকাল ৮ টায় কুমিল্লা লাকসাম জংশনে পৌঁছালে হকাররা ট্রেনে প্রবেশ করতে যায়। এই সময় স্টুয়ার্ড শামিম এবং স্টুয়ার্ড রাহুল তাদের বাধা দিলে হকাররা সংঘবদ্ধভাবে তাদের উপর হামলা করে। এই সময় ট্রেনে থাকা অন্তর নামে একজন যাত্রী তাদের সাহায্যে করতে ছুটে আসলে তাকেও মারধর করে হকাররা।
উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের ফেইসবুক পেইজে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি পোষ্ট আপলোড করে। সেই পোষ্ট পড়ে জানা যায়, লাকসাম জংশনে শত শত হকার এক হয়ে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ মিনিট আটকিয়ে স্টুয়ার্ড শামিম এবং স্টুয়ার্ড রাহুলকে বেধড়ক মারধর করে। স্টেশনে এত বড় ঘটনা সময় বৃহত্তর লাকসাম জংশনে একটি জিআরপি থানা এবং একটি আরএনবি অফিস কেউ এগিয়ে আসে নাই। অভিযোগ রয়েছে, এরা প্রতিদিন মোটা অংকে টাকা ভাগ নেয় এ হকারদের থেকে।
ঘটানার স্থলে অদুরে থেকে কোন সাহায্য না করে পুলিশের এএসআই আলিম সহ অনেক পুলিশ ও আরএনবি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিলো।
স্টুয়ার্ডদের মারামারি ঘটনা সময় ঠ-বগিতে (২৪ নাম্বার) সিটে অন্তর নামে একজন যাত্রী এগিয়ে আসে স্টুয়ার্ডদের পক্ষ নিয়ে উনার ও হাতের আঙ্গুল ভেঙে দেয় এবং সেই যাত্রী সাথে থাকা মানিব্যাগ, মোবাইল (মানিব্যাগে থাকা ০৮ হাজার নগদ টাকা ছিলো হাকাররা তা নিয়ে যায়।
অন্তর নামে সেই যাত্রী বাড়ী লক্ষ্মীপুর জেলায়।
উনি ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী।
স্টেশন অপেক্ষমান এক যাত্রী মহিবু ইসলাম বলেন, ‘দিন দিন হকার লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে এদের সিন্ডিকেটের বিশালতা। এর পিছনে পৃষ্ঠপোষকতা করেন রেলের কিছু অসাধু লোক (পুলিশ এবং আরএনবি)। দৈনিক এদের থেকে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
নাম প্রকাশেঅনিচ্ছুক অসংখ্য হকার বলেন, প্রতিদিন লাকসাম জংশন প্রবেশ করলে জনপ্রতি হকারদের থেকে ২০ টাকা করে নেয়া হয়। যেই টাকার ভাগ যায় রেলপ্রশাসনের হাত ধরে উপর মহল পর্যন্ত তাই হকারদের হুংকারও বড়’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাকসাম রেলওয়ে জংশনের এক কর্মচারী বলেন, রাশেদ নামে প্লাটফর্মে নিয়মিত এক ব্যক্তি হকারদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ হকারদের কাছ থেকে ২০-৩০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। মাস শেষে সেই চাঁদার পরিমান দাঁড়ায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। আর সেই চাঁদার অংশ চলে যায় স্টেশন মাস্টারসহ রেলওয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে।
লাকসাম জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুরাদ উল্লাহ বাহার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা যদি মামলা করে তাহলে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো’।
লাকসাম জংশনের স্টেশন মাস্টার মো: মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি এই সময় জংশনে ছিলাম না। তবে জিআরপি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।’