সৌরভ লোধ :
সারাদেশের মতো কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ছয় জেলার কলেজগুলোতে আজ রোববার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত হলো উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা।
কুমিল্লা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন বেশী।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ছয়টি জেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৯০ জন। এ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের তুলনায় অন্তত ১৬ হাজারের অধিক মেয়ে পরীক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী ৪৮ হাজার ৪৭১ জন এবং মেয়ে পরীক্ষার্থী ৬৪ হাজার ৮১৯ জন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৪৮ জন বেশি।
কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৪৩২টি কলেজের শিক্ষার্থীরা ১৯৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে, বোর্ডে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কুমিল্লা জেলায়। এখানে ১৬৩টি কলেজের ৩৯ হাজার ৪৯২ জন। নোয়াখালী জেলায় ৫৫টি কলেজের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯হাজার ৭৮৯ জন, ফেনী জেলায় ৪২ কলেজের ১১ হাজার ৮০ জন, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৪০টি কলেজের ১১ হাজার ৩৪৮ জন, চাঁদপুর জেলায় ৬৭টি কলেজের ১৬ হাজার ২৩২ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬৫টি কলেজের ১৫ হাজার ৩৫৯ জন শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষায় এই তিন বিভাগের মধ্যে মানবিকে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পরীক্ষার্থী এবার অংশ নিচ্ছেন। মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫২ হাজার ৪১৪ জন, বিজ্ঞান বিভাগে ২৮ হাজার ৯২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩২ হাজার ৭৪৮ জন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ৬ জেলায় ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষার্থী কিংবা পরীক্ষক যারাই কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত হবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. নিজামুল করিম বলেন, বিগত এস এস সি পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ ছেলে এবং মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় এতটা ব্যবধান ছিল না। মূলত: এসএসসি পরীক্ষায় পাসের পর ছেলেরা উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকানোর আগেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হওয়াকে এমন ব্যবধানের কারণ বলে আমার মনে হচ্ছে।
আগানগর ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নানা সামাজিকও আর্থিক কারণে মেয়ে পরীক্ষার্থী বেড়েছে এবং ছেলে পরীক্ষার্থী সংখ্যা কমেছে। এর আর একটি কারণ হলো, এখন ছেলেরা এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে কম বয়সেই কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যুক্ত হচ্ছে বাবার দেয়া ব্যবসাবানিজ্যে। তাছাড়া ইদানীং লক্ষ্য করা গেছে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা শ্রেণীকক্ষে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে অমনোযোগী এবং অনিয়মিত। মূলত: এসব কারণেই এবারের এইচ এস সি পরীক্ষায় মেয়ে পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণ বেশি।