সৌরভ লোধঃ
পুলিশের লাঠিচার্জের পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
এর আগে বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধের উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ক্যাম্পাস সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প এলাকায় পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে। মিছিল ঠেকাতে একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীসহ দুই সাংবাদিকও আহত হন বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে গত চার দিনের মতো আজকেও মহাসড়ক অবরোধের জন্য যাচ্ছিলাম। সেসময় পুলিশ প্রথমে আমাদের বাধা দিয়ে আমাদের ব্যানার এবং মাইক ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আমরা স্লোগান দিতে থাকলে একপর্যায়ে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে আমরা আবার মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের ওপর দ্বিতীয় দফায় হামলা চালায়। এরপর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের শিক্ষার্থী মিলে মিছিল নিয়ে তাদের উপেক্ষা করে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেছি।’
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষর্থী তাওহীদ সানি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য কোটবাড়ি বিশ্বরোড যাচ্ছিলাম। রাস্তায় পুলিশ আমাদের বাধা দেয় এবং হামলা চালায়। এতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশের এই ন্যক্কারজনক কাজের জন্য আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কেন পুলিশ বাধা দেবে? কেনই বা আমাদের ওপর হামলা চালাবে? আমরা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে যাচ্ছি। তাহলে কেন পুলিশ ইয়াহিয়া খানের বাহিনীর মতো এতো উগ্র আচরণ করবে?’
পুলিশের ‘হামলার’ নিন্দা জানিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল হোসেন বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের অতর্কিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তাদের হামলায় আমার অনেক ভাই আহত হয়ে মেডিকেলে আছেন। এর সুষ্ঠু বিহিত ও আমাদের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আজকে রাজপথ ছাড়ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতিও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কারণ পুলিশ তাদের সামনেই ক্যাম্পাসের কাছে আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাফি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমরা তাদের প্রতিপক্ষ না। বিষয় হচ্ছে তারা যদি দেশের কোনো ব্যস্ততম রাস্তা বেআইনিভাবে আটকে রাখে সেক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব সেটিকে ক্লিন রাখা। আমরা শুধুই আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।’