সৌরভ লোধ
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে কথিত প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পর দুই নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নূরপুর এলাকার খোকন স’মিলের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
পরে সোমবার মধ্যরাতে সাত জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন এক ভুক্তভোগী নারী। ভুক্তভোগী দুইজনের মধ্যে একজনের বয়স ২০ বছর এবং আরেকজনের বয়স ৩৫ বছর।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে ফজলুল হক। গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে দুই নারী থানায় এসে সাত জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তাঁদেরকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁদের মেডিকেল টেস্টের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। আপাতত তাঁরা নাঙ্গলকোট থানায় আছেন।
ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘তাঁরা দুইজন কুমিল্লা শহরের টমসনব্রিজ এলাকায় একসঙ্গে থাকেন। তাঁদের একজনের বাড়ি চাঁদপুর এবং একজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীর সঙ্গে নাঙ্গলকোটের শহীদ নামের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার তাঁরা শহীদের সঙ্গে দেখা করতে কুমিল্লায় আসেন। এর পর সেখান থেকে তাদেরকে একটি স’মিলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।’
ভুক্তভোগী দুই নারী সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার নাঙ্গলকোট যাওয়ার পর অভিযুক্তরা বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাঁদেরকে প্রথমে একটি অটোরিকশায় করে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরাঘুরি করে। তাদের উদ্দেশ্য ভালো না বুঝলে তাদের সঙ্গে এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। কেউ ছিল না আশপাশে তখন। পরে ১২টার দিকে তারা একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে ১০ থেকে ১২ জন দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মারধর করে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। এ সময় চিৎকার চেঁচামেচি করলে, মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, পরে শনিবার ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্তদের মধ্যে ছয়জনকে আবার দেখা যায়। এ ঘটনায় মিল মালিকও জড়িত আছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত তাবাস্সুম বলেন, ‘দুই নারী আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনায় তাঁরা সোমবার থানায় এলেন, তাই সব কিছু অনুসন্ধান করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’