কুমিল্লা প্রতিনিধি ||
কুমিল্লার বরুড়ায় এক গৃহবধূকে হত্যার পর ওড়না দিয়ে লাশ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে শশুড় বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে বরুড়া বাজারের জিরো পয়েন্টে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন নিহত পরিবারের লোকজন ও এলাকার বাসিন্দারা।
নিহত মুন্নি আক্তার(২২) শিলমুড়ী উঃ ইউনিয়নের আলোকদিয়ায় গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে।
২০২১ সালে সাহারপুদুয়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে প্রবাসী ফয়সাল হোসেনের সাথে তার বিয়ে হয়।

মুন্নির বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, প্রায়ই মুন্নির সাথে তার শশুড়, শাশুড়ী এবং ননদ সাংসারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে খারাপ আচরণ করতো। নির্যাতন করতো প্রতিনিয়ত। আমাদের সন্দেহ শশুড় বাড়ির লোকেরাই মেরে ফেলেছে আমাদের মেয়েকে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার দিনই কুমিল্লা বিজ্ঞ আদালতে
হনুফা বেগম(শাশুড়ী), দেলোয়ার হোসেন (শশুড়), আব্দুর রহমান(ননসের শশুড়), খুকি আক্তার(ননস), মো:হাসান( ননসের স্বামী) এর নামে হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়।
মামলার পরও আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্নির বাবার বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা মিলে বরুড়ার জিরো পয়েন্ট এলাকায় দীর্ঘ মানববন্ধন তৈরি করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে মুন্নি হত্যার বিচার দাবি জানানো হয়। এ সময় তাঁরা আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
মুন্নি আক্তারের মা রোকসেনা বেগম বলেন, আমার মেয়ের দুই বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে। মুন্নির স্বামী ফয়সাল হোসেন প্রবাসে থাকায় তাঁর শশুড়, শাশুড়ী এবং ননদ সাংসারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে প্রায়ই নির্যাতন করতো তাকে। যার কারণে আমার মেয়ে বেশির ভাগ সময় আমাদের বাড়িতেই থাকতো। গত ২৬শে ফেব্রুয়ারী রমজান উপলক্ষে মুন্নির প্রবাসী স্বামীর অনুরোধে সাহারপুদুয়ায় তার শশুড়বাড়িতে তাকে দিয়ে আসি। কিন্তু শশুড়বাড়িতে আসার পরদিন ২৭শে ফেব্রুয়ারী ১১টায় লোক মারফতে জানতে পারি আমার মেয়ে মৃত্যুবরন করছে। এই খবর শুনে দ্রুত সাহারপুদুয়া মেয়ের শশুড়বাড়ি এসে দেখি আমার মেয়ের গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো। তাকে বাহিরে মাটির উপর শুইয়ে রাখা হয়েছে। তখন আশেপাশের প্রতিবেশীদের সূত্রে জানতে পারি রমজানের বাজার নিয়ে তার শশুড় বাড়ীর লোকজনের কটাক্ষের শিকার হয়ে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়েছে মুন্নি। কিন্তু আমি জানি আমার মেয়ে এই সামান্য কটাক্ষে কখনোই ফাঁস দিবে না। আমার মেয়েকে তারা মেরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রেখেছে। যাতে করে সবাই বুঝে মুন্নি ফাঁসি দিয়েছে। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সঞ্জয় সরকার বলেন, ইতিমধ্যেই একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। এই মামলার আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান আছে।
