বিবর্তন নিউজ:আবু হনিফ(হৃদয়)
কুমিল্লা জেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে স্থায়ী ভাবে নির্মিত শহীদ মিনার নেই।
তাছাড়া কিন্ডার গার্টেন ও উপজেলা গুলোর প্রায় মাদ্রাসায় নেই শহীদ মিনার। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস সহ জাতীয় দিবস গুলোতে অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চেতনার প্রশ্নে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে কলাগাছ কিংবা বাঁশ-কাঠ দিয়ে ১/২ দিনের জন্যে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয়। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে শুধু পতাকা উত্তোলন করে বিশেষ দিবস পালন করা হয়। ফলে শ্রণীভেদে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে স্বদেশপ্রেম ও মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিক্ষা অর্জনে। জাতীয় দিবসের গুরুত্ব ও শহীদদের সম্পর্কেও জানতে পারছে না তারা।
কুমিল্লায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে এবং মাদ্রাসার সংখ্যা ৩২২৫ এর মধ্যে ১৫৪৮ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই শহীদ মিনার।জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক অফিসের তথ্য মতে, বিভিন্ন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২১০৭টি এর মধ্যে ১২৩৮ টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। যা অর্ধেকের চেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৭৪ টি শহীদ মিনার নেই ৭২ টি বিদ্যালয়ে। স্কুল এন্ড কলেজের সংখ্যা ৫০ টি শহীদ মিনার নেই ৩ টিতে, কলেজের সংখ্যা ১১৭ টি শহীদ মিনার নেই ১৪ টি কলেজে, এবং বিভিন্ন উপজেলায় মাদ্রাসার সংখ্যা ৩৭৭ টি শহীদ মিনার নেই ২৫৯ টি যা অর্ধেকের চেয়ে বেশি মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই।এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যহ্ম মো: আলতাফ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হল একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গসহ সমস্ত বাংলাভাষী অঞ্চলে পালিত একটি বিশেষ দিবস, যা ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বরে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। এটি শহীদ দিবস হিসাবেও পরিচিত। এ দিনটি বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালে এইদিনে (৮ ফাল্গুন,১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ ছাত্র শহীদ হন। যাঁদের মধ্যে রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত উল্লেখযোগ্য এবং এই কারণে এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।এ বিষয়ে সুশীল সমাজের লোকজন বলেন, এত বছর পর বাংলার এ দেশে শহীদ মিনার নেই ভাবতেই অবাক লাগে। তবে প্রশাসন অভিভাবক ও স্থানীয় বিত্তশালীরা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন। যে সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই তারা পার্শ্ববর্তী নিকটতম স্থানে যেখানে শহীদ মিনার আছে সেখানে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদদের।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: শফিউল আলম বলেন, সকল বিদ্যালয়গুলিতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহীদ দিবসটি তাৎপর্য বুঝতে পারতো। আমরা আশাবাদী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান হবে।কুমিল্লা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী আসলে বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না হওয়ার মূল কারণ উদ্যোগের অভাব। আমরা প্রধান শিক্ষকদের উৎসাহিত করছি। আশা করছি বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার নির্মিত হবে।