ছবি: নিহত অর্ণব।
বিবর্তন ডেক্স:
কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছায় স্থানীয় মাইক্রো ড্রাইভার এবং একই এলাকার একজন মহিলা যাত্রির পারস্পরিক কথাকাটাকাটি তে সংঘর্ষ বাঁধে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে কুমিল্লার শাসনগাছা এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষটি এক পর্যায়ে শাসনগাছার লেগুনা স্ট্যান্ডের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শাসনগাছা মধ্যমপাড়া দফাদার বাড়ীর আবুল কাশেম গং ও শাসনগাছা মোলা বাড়ির মধ্যে রাব্বি আলাউদ্দিন গংদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে গুলিতে অর্নব , পিতা আজহার উদ্দিন নামে মধ্যমপাড়া গ্রুপের একজন নিহত হয়। আরো তিন জন গুলিবিদ্ধ হন।
নিহত ২৭ বছর বয়সী জামিল হাসান অর্ণব শাসনগাছা মধ্যমপাড়া আজহার মিয়া ছেলে। ছাত্রদল কর্মী ছিলেন তিনি। এ ছাড়া শাসনগাছা বাস টার্মিনালের সততা বাস সার্ভিসের ম্যানেজার ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি শাখার শিক্ষার্থী ছিলেন অর্ণব।
সংঘর্ষে যে চারজন আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে নাজমুল জামান অনিকের (২৮) ডানপায়ে গুলি লেগেছে, এ ছাড়া চেয়ামত উল্লাহর (৩৫) কোমরে, নুরুল আফসার মোহনের (২২) পিঠে এবং নাজমুল হাসান (২৬) হাতের নিচে গুলি লেগেছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরতলী শাসনগাছা বাস টার্মিনালে কর্মরত অবস্থায় অর্ণবকে একই এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী রাব্বি ও আলাউদ্দিন এসে প্রকাশ্যে গুলি করেন। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহতদের কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ণব মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন শিবলু বলেন, “অর্ণব আমাদের কর্মী। সাংগঠনিকভাবে দুর্বল থাকায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। এবারের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তার নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছিল”।
স্থানীয়দের মতে, আধিপত্য বিস্তারের এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপে আওয়ামী ও বিএনপির লোক রয়েছে। তবে সংঘর্ষ রাজনৈতিক নয় বলে জানা যায়। এ ঘটনায় রাব্বির পিতা খলিল মিয়া কে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রববারের জুম্মার নামাজ শেষ করে বাসায় গিয়ে বাসা থেকে কর্মস্থলে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয় অর্ণব।
এদিকে ঘটনা স্থল পরিদর্শন শেষে কুমিল্লা পুলিশ সুপার জানান,” ঘটনার শুরুটা ছিল খুবই তুচ্ছ। নগরীর শাসনগাছার মাইক্রো বাস ড্রাইভার প্রতিবেশী এক মহিলা যাত্রির সাথে কথাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক ফাঁকে মহিলা তার ভাগিনা ঘাতক রাব্বিকে তাদের মাঝে ডেকে আনে। রাব্বি অস্ত্র হাতে নিয়ে ঘটনা স্থলে এসে সংঘর্ষ বাঁধায় এবং এক পর্যায়ে এলো পাথারি গুলি করে। এতে ঘটনার স্থলে থাকা চার জন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে রাব্বির গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অর্ণব নামের একজন নিহত হন”।পুলিশ সুপার আরো জানান, “যাত্রি মহিলা শাসনগাছার মোল্লাবাড়ীর এবং মাইক্রোড্রাইভার আবুল কাশেম একই এলাকার মধ্যম পাড়ার দফাদার বাড়ীর বাসিন্দা। নিহত অর্নব এবং তার পুরো পরিবার বিএন পি ও ছাত্রদলের সংগে জড়িত বলে তার বাবা আমাকে জানিয়েছেন”। তিনি জানান, “অর্ণব মূলত ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না। সে শাসনগাছা বাসস্টেশনের একটি বাস কাউন্টারে চাকুরি করেন। ঘটনার আগে দুপুরের জুম্মার নামাজ শেষে বাসায় যায় অর্ণব। বাসাথেকে বের হয়ে কাউন্টারে যাওয়ার পথে সে গুলিবিদ্ধ হয়”।
এদিকে, নাজমুল ও অনিক নামের গুলিবিদ্ধ দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিশু নামের গুলিবিদ্ধ একজন মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে।