কবির হোসেন, তিতাস থেকে:
কুমিল্লা তিতাস উপজেলায় ফসলী উর্বর জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই মহল্লাবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয় পক্ষের নারীসহ ৪ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাহাদ নামের একজনকে আটক করেছে তিতাস থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের দড়িমাছিমপুর গ্রামে।
আহতরা হলেন, আবুল কাশেম(৬০),মো.শফিক মিয়া(৪০),মিনা বেগম(৪৫) ও শাহআলম(৩৫)।
এদের মধ্যে মো.শফিক মিয়া অবস্থা আশংকাজনক তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে ঘটনা স্থলে গিয়ে দেকা যায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে আবারও যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, একই গ্রামের টেগুড়া পাড়ার মতিন মিয়া ও মুকুল মিয়া সহোদর ভাই তারা দীর্ঘদিন ধরে ফসলী জমি থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে এতে করে পাশের ফসলী জমি গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফসলী জমি রক্ষায় একই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার জমির মালিকরা প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিলে মতিন-মুকুল ক্ষিপ্ত হয়।
এবিষয়ে কৃষক বিল্লাল বলেন, আমাদের পাশের জমি থেকে মতিন ও মুকুল তারা দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে, এতে আমাদের ফসলী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে, আমরা ইব্রাহিম চেয়ারম্যান এর নিকট বিচার দিলে তখন তখন মতিন ও মুকুল কথা দেয় তারা আর বালু উত্তোলন করবেনা এবং আমাদের জমির ক্ষতি পূরণ দিবে। তিনি আরও বলেন, ফসলী জমি রক্ষায় আমাদের বাড়ির কামাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে মুকুলের ভাগিনা ফয়সাল উসকানিমূলক মন্তব্য করে এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় রফিক লাল, ফয়সাল, আবদিন ও উজ্জ্বলসহ ১০/১২ জন দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আবুল কাশেম ও মো.শফিক মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করে।
অপরদিকে মতিন মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, আমার ননদের ছেলে ফয়সালকে মারার জন্য দক্ষিণ পাড়ার জামাল,বিল্লাল ও মহসিনসহ ২০/২৫ জন দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িতে হামলা করে এমসয় আমার ননদ মিনা বেগম ও শাহআলম গুরুতর আহত হয়। এঘনার সময় আমার দেবর মুকুল বাড়িতে ছিল না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সরকার বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না শনিবার সকালে বাড়িতে এসে ঘটনা স্থলে গিয়ে খোজ খবর নেই এবং আহত শফিক মিয়ার খোজ খবর নিচ্ছি ও তার চিকিৎসার জন্য আমার সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতা করবো।
কি নিয়ে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো? জানতে চাইলে চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সরকার বলেন,ফসলী জমি থেকে বালু উত্তোলনসহ পূর্বের সত্রুতা নিয়ে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলেন ধারনা করছি।
তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, দড়িমাছিমপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং রাতে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রাহাদ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় আহত শফিকের বড় ভাই ফরিদ মিয়া বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত রেখে একটি মামলা করেছে। এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে দড়িমাছিমপুর গ্রামে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।