বিবর্তন ডেস্ক:
কুমিল্লা সদর আসনের এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেছেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। ভারতের ক্লাসে প্রথম হওয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর যেমন স্বপ্ন থাকে নাসার বিজ্ঞানী হওয়ার, গবেষক হওয়ার। তেমনি আমাদের সন্তানদেরও স্বপ্নবাজ হতে হবে। জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। আর উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হলো প্রযুক্তি। তাই প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান।
১৩ মে সোমবার সকালে কুমিল্লা জিলা স্কুলে দুই দিনব্যাপী ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কারণে জাতি দীর্ঘ সময় পথভ্রষ্ট ছিল। ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ভিশন ২০২১ ঘোষণার মাধ্যমে জাতির সামনে প্রত্যাশার আলো জ্বালিয়ে দিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে আমরা আজকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, এটমিক পাওয়ার প্ল্যান্ট , পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেলের মতো উন্নয়নের অংশীদার। শেখ হাসিনা আজকের ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন কাজ করছেন। সেই বাংলাদেশের অংশীদার হবে আজকের শিক্ষার্থীরা।
হাজী বাহার এমপি আরও বলেন, আজকে আমাদের কুমিল্লাই তো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। এই জিলা স্কুল, ফয়জুন্নেছা স্কুলের দিকে তাকালে গর্বে বুক ভরে যায়। পাকিস্তান আমলে আমরা একজন বাঙ্গালী প্রধান বিচারপতি তৈরী করতে পারিনি। আর আজকে এই জিলা স্কুল থেকে দুই জন প্রধান বিচারপতি তৈরি হয়েছে। সেনা প্রধান সহ দুইজন কেবিনেট সেক্রেটারি তৈরি হয়েছে। এজন্যই বলি- কুমিল্লা এগুলে এগোবো বাংলাদেশ। এ চেতনাকে আমাদের শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সহযোগিতায় দুই দিনব্যাপী ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের ১ম দিনে সকাল সাড়ে ১১ টায় কুমিল্লা জিলা স্কুল চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন করেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন৷ কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান । অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কুমিল্লা জিলা স্কুল সভাকক্ষে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী সমৃদ্ধি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ শেষ হবে বুধবার (১৪ মে)।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া বলেন, বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান মনস্ক হয়ে উঠতে হবে। দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপনার জন্য শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে নিজের মেধাকে বিকশিত করতে হবে।
সভা শেষে অতিথিরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিষয় তুলে ধরে আলোচনা করেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার ১৭ উপজেলা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক স্টল দু’দিনব্যাপী এ মেলায় স্থান পেয়েছে। মেলায় কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান বলেন, তরুণ বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনের ফলে পাল্টে যাবে দেশ। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে পরিবর্তন আনবে এই মেলা। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে বিকশিত করার অপূর্ব সুযোগ রয়েছে এই মেলায়। তরুণ সমাজকে মাদকাশক্তি, মোবাইল আসক্তিসহ সব ধরনের সামাজিক অপরাধ থেকে ফিরিয়ে এনে বিজ্ঞান চর্চায় মগ্ন থাকলে তাদেরও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটবে এবং উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মোস্তফা , অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) কামরান হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম । আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল হোসেন, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ প্রমুখ।