বিবর্তন রিপোর্ট :
কুমিল্লা নগরীর চিহ্নিত চাঁদাবাজ আবদুল হাসান চৌধুরী অপুকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে তাকে তার মোগলটুলির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কুমিল্লার ট্রাফিক পরিদর্শক জিয়াউল হক চৌধুরী টিপুর ছোট ভাই।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘অপুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮/৯টি মামলা রয়েছে। এতদিন জামিনে ছিলেন। চাঁদাবাজি ও হামলার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়’।
কুমিল্লা তনগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, জাতীয় পার্টির নেতা এয়ার আহমেদ সেলিমের ছেলে শাকিল আহমেদ রানা বলেন, ‘অপু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৫ নম্বর ওয়ার্ডে যারাই নতুন বাড়ি নির্মাণ কিংবা সংস্কার করেন তাঁদের নিকট চাঁদা দাবি করেন। এই চাঁদাবাজ চক্রটিও আমার সাথেও একই আচরণ করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২২ মে রাত ১১ টার দিকে চাঁদাবাজ অপু ও তার সঙ্গীরা গাড়ি থামিয়ে আমাকে আক্রমণ করে। আমাকে পিটিয়ে আহত করে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসি। এরপর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করি। পুলিশ রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে’।
তিনি জানান, শুধু চাঁদাবাজিই নয়, অপু নিজেকে সার্জেন্ট পরিচয় দিতেন। তার থেকে বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন। নির্মাণ সামগ্রী না কিনলে ট্রাক আটক করে তার পুলিশ পরিদর্শক ভাইয়ের কাছে নিয়ে যেতেন। তার সাথে পরিবারের আরও কিছু সদস্য জড়িত আছেন।
এর আগে শাকিল আহমেদ রানা তার ওপর হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টটি শেয়ার করেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা। তিনি সেখানে চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে মেয়র সূচনা বলেন, ‘অপু একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ। তার বিষয়ে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাহসীন বাহার সূচনা বলেন, যারাই এই নগরীতে চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করবে তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না’।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা জানান, অপুর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রতিনিয়ত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে। তার সাঙ্গপাঙ্গরা খোঁজখবর নেয় কে বাড়িঘর তৈরি করছে। পরে অপু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে চাঁদাবাজি করেন। তিনি পূর্বেও চাঁদাবাজি করে জেল খেটেছেন। তিনি চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশ পরিদর্শক ভাইয়ের প্রভাব খাটান।
এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক জিয়াউল হক টিপু বলেন, অপু আমার আপন ছোট ভাই নয়। এলাকার ছোট ভাই। আত্মীয়স্বজনের সাথে কথা কাটাকাটি নিয়ে তার সাথে ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, অপু নিজেকে ট্রাফিক সার্জেন্ট পরিচয় দেয় এ কথা আগে শুনিনি। তার ভাই ট্রাফিক পরিদর্শক জিয়াউল কি-না এ বিষয়টিও আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।