নিজস্ব প্রতিবেদক।।
“ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়-ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই। ধর্ম যার যার-রাষ্ট্র সবার”-এই শ্লোগান সামনে রেখে ৮ দফা দাবী বাস্তবায়নসহ অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও বিচার, হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং বাস্তহারাদের জায়গা জমি ফিরিয়ে দেওয়ার সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় কুমিল্লা কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল বের করেন ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা।
ওই বিক্ষোভ মিছিলটি পূবালী চত্বর হতে বের হয়ে মনোহরপুর, রাজগঞ্জ, ছাতিপট্টি ও ছকবাজার হয়ে পুনরায় কান্দির পাড় হয়ে মহেশাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এসময় হাতে ছিলো “আমার মাটি আমার মা বাংলাদেশ ছাড়বো না” লিখা প্লে কার্ড মুখে প্রতিবাদি শ্লোগান “লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে, সনাতনীরা জেগেছে।”
সমাবেশে আট দফা দাবী বাস্তবায়নসহ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন, ঘর-বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট এবং মন্দিরে অগ্নিসংযোগ অনতিবিলম্বে বন্ধ করা এবং দোষীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান বক্তারা।
এতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি চন্দন কুমার রায় এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল পাল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা মহানগর শাখার সাধারণ অচিন্ত্য দাশ টিটু, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কমল চন্দ খোকন ও আইসিটি সম্পাদক এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র সরকার ও মহেশাঙ্গণ লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিকসহ বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ।
ওই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।
আট দফা দাবীগুলো হচ্ছে:
১) সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা।
২) অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রনয়ন করতে হবে।
৩) সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা।
৪) হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নতি করতে হবে। পাশাপাশি বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নতি করতে হবে।
৫) “দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন” প্রনয়ণ এবং “অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন” যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৬) প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যা লঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা।
৭) “সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড” আধুনিকায়ন করা।
৮) শারদীয়া দুর্গাপূজায় ৫ (পাঁচ) দিনের ছুটি ঘোষণা করা।