সৌরভ লোধ ||
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বছর উদযাপন করা হচ্ছেনা চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিন থেকে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হলেও এবছর তার কোন নাম গন্ধ নেই।
চাঁদপুরের সুশীল সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে এ বিষয়ে আলাপ করে জানা গেছে, ১৯৯২ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে একটানা মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা হয়ে আসছে। মাঝখানে কয়েক বছর পূর্বে করোনকালীন সময় এক বছর বিজয় মেলা বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া সারাদেশে যখন সিরিজ বোমা হামলা হয়েছিলো। সেই সময়ে চাঁদপুর হাসান আলী মাঠে বিজয় মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে শুরু করার কথা থাকলেও। জঙ্গিবাদের বোমা হামলার ভয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে ওই বছর মেলা বন্ধ রাখা হয়।
১৯৯২ সাল থেকে প্রথমে চাঁদপুর হাসান আলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই মেলার শুভ সূচনা হয়ে ৩০ বছর ধরে ওই মাঠেই মেলার আয়োজন করা হতো। বছরের পর বছর যখন ধীরে ধীরে মেলার প্রচার প্রচারনা এবং দর্শনার্থীসহ দোকান বাড়ার কারনে চাঁদপুর শহরের যানজটের কথা চিন্তা করে পরবর্তীতে সেটিকে চাঁদপুর শহরের আউটার স্টেডিয়ামে নেয়া হয়। গত দুই বছর পূর্বে ব্যাপক পরিসরে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে বিজয় মেলা উদযাপন করা হয়।
অন্যান্য বছর গুলোতে নভেম্বর মাস থেকেই মেলা মাঠের প্রস্ততির কাজ করতে দেখা গেছে। কিন্তু এ বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়েও মেলা উদযাপনের তেমন কোন দৃশ্য চোখে পড়েনি। এমনকি ডিসেম্বর মাসে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন করা হবে তারও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
খবর নিয়ে জানা গেছে, জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গত ৫ আগস্ট গনঅভ্যূথানে সরকার পতনের কারনে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি। বিগত বছর গুলোতে যারা বিজয় মেলার নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তাদের অনেকেই রাজনৈতিক কারনে পলাতক বা গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। এমনকি চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধা এম এ ওয়াদুদকে নিয়েও অনেক মুক্তিযুদ্ধারা বিতর্ক করে বিজয় মেলার প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় যার কারনে এই বছর ডিসেম্বর মাসে চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন করা হবেনা বলে জানা গেছে।