বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করা যাবে না: কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ
বিবর্তন ডেক্সঃ
১৬ আগস্ট বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে জাতীয় শোকদিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও তার পরিবারবর্গের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোঃ আহছান উল্লাহ খন্দকার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আবু তাহের এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেলাল উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন- কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ পিন্টু, কুমিল্লা জেলা পিপি এডভোকেট মোঃ জহিরুল ইসলাম সেলিম, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার আহবায়ক ও লাকসাম উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইউনূস ভূঁইয়া, জিপি এডভোকেট তপন বিহারী নাগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য সচিব ও সাবেক জেলা পিপি এডভোকেট মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবদুল মমিন ফেরদৌস, স্পেশাল পিপি এডভোকেট আবদুল হামিদ মানিক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ সৈয়দ নুরুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক বেগম নাসরিন জাহান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ইমাম হাসান ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামাল হোসেন ।
সভায় প্রধান অতিথি কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে এক দল বিপথগামী সেনা সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়-পরিজনসহ নির্মমভাবে হত্যা করে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ ঘটিয়েছিল। সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দিনটিকেই জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই দিবসটি বাঙালী জাতি তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধায় অভিভূত হয়, শোকাভিভূত হৃদয়ে শ্রদ্ধার অশ্রু নিবেদন করে।
এখনো দূর্নীতি মুক্ত হয়নি। তিনি বলেন দেশে একটি অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন সমাজ আবশ্যক।
সভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বাঙালি জাতির জন্য একটি চরম কলঙ্কজনক অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে এবং শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে পশ্চিমা হানাদারদের বিরুদ্ধে জীবনপণ সংগ্রাম করে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সগৌরব উত্তরণ ঘটিয়েছেন বলে অভিব্যাক্তি প্রকাশ করেন।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে আহব্বান জানানো হয়েছিল তাতে সাড়া দিয়ে বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বীর জাতি হিসেবে বাঙালি বিশ্বের বুকে অনন্য ইতিহাসের সৃষ্টি করেছে। এর জন্য ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে আত্মহুতি দিতে হয়েছে। এই সংগ্রাম ও স্বাধীনতার পিছনে বঙ্গবন্ধুর সীমাহীন প্রেরণা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! ক্ষমতা গ্রহণের কিছুদিন পড়েই কয়েকজন বিপথগামী সেনা সদস্যের উচ্চাকাঙ্খার জন্য তাঁকে সপরিবারে প্রাণ দিতে হলো। শোকসাগরে ভাসল সারা দেশবাসী। এতে সারা বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হলো। দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছিলেন তা এভাবেই মর্মান্তিক পরিণতি। দীর্ঘ দিন পড়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবার জাতির শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে জাতিকে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নেয়ার সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হবে এবং স্বাধীন দেশের মর্যাদা সমুন্নত করে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন বক্তারা।