তাল পাতায় লেখা পূঁথি সহ সুপ্রাচীন পান্ডুলিপি।
বিবর্তন ডেস্ক: কুমিল্লা নগরীর শিক্ষাবোর্ড সংলগ্ন ঈশ্বর পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত এশিয়া খ্যাত রামমালা গ্রন্থাগারে অযত্নে মূছে যাচ্ছে দূষ্প্রাপ্য প্রাচীন হাতে লেখা পূঁথি- পান্ডুলিপির অজানা ইতিহাস।
প্রায় ১ শ ১২ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লার এ রামমালা গ্রন্থাগার যা এ উপ-মহাদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সভ্যতার ধারার জলন্ত উদাহরণ হিসেবে আজো প্রণিধান যোগ্য।
বাংলাদেশে এরকম প্রাচীন সংগ্রহশালা আরেকটি নেই । প্রাচীন এ গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে পুঁথি, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানা নিদর্শন। যা কালের সাক্ষী হয়ে শতবর্ষ পার করেছে ১১ বছর আগে। অযত্নে-অবহেলা আর যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রামমালা গ্রন্থাগারের অমূল্য বই আর দুষ্প্রাপ্য পুঁথি-পান্ডুলিপি সমাহার।
রামমালা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য। তার মাতা রামমালা দেবী স্মরণে ১৯১২ সালে কুমিল্লা শহরের উপকন্ঠ শাকতলায় নিজ বাড়ির বৈঠকখানায় তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময় ঈশ্বর পাঠশালার অন্যতম পন্ডিত সূর্যকুমার স্মৃতিতীর্থ গ্রন্থাগারটি পরিচালনা করতেন। সংস্কৃত ভাষায় লেখা বেশিরভাগ শাস্ত্রগ্রন্থ সাধারণ পাঠকের বোধগম্য হয়নি বিধায় গ্রন্থাগারে কিছু কিছু বাংলা পুস্তক, প্রবাসী, ভারতবর্ষ মাসিক পত্রিকা রাখা হতো। ধীরে ধীরে গ্রন্থাগারে হাতে লেখা প্রাচীন পুঁথিও সংগৃহীত হতে থাকে। ১৯৫০ সালে শিক্ষাবোর্ডের সামনে মহেশাঙ্গনে রামমালা গ্রন্থাগারটি স্থানান্তর করা হয়।
কুমিল্লার এ রামমালা গ্রন্থাগারে বিভিন্ন ধরণের ৩০ হাজার বই ও ৮ হাজার প্রাচীন পুঁথি রয়েছে। পুঁথিগুলো সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় লেখা। সংস্কৃত ভাষায় পুঁথির সংখ্যা ৬ হাজারেরও বেশি। এছাড়া পান্ডুলিপিগুলো তালপাতা, কলাপাতা, তুলট কাগজ ও কাঠসহ নানা উপাদানের ওপরে লেখা।
রামমালা গ্রন্থাগারটিতে বর্তমানে তিনটি বিভাগ রয়েছে। গবেষণা, পুঁথি ও সাধারণ। গবেষণা বিভাগে ভারতীয়, সংস্কৃতি, বেদ, ধর্মসহ বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম সংরক্ষিত আছে। সাধারণ বিভাগে রয়েছে দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন গ্রন্থ। পুঁথি বিভাগে হাতে লেখা প্রাচীন সংস্কৃত ও বাংলা পুঁথি সংরক্ষিত রয়েছে। যার সংখ্যা প্রায় আট হাজার। তারমধ্যে দুই হাজার তালপাতায় লেখা। বাকিগুলো কলাপাতা, তালপাতা, ভোজপাতা ও গাছের বাকড়সহ কাঠের ওপর খোদাইকৃত হাতের লেখা।
পুঁথি বিভাগে ৩ থেকে ৪শ’ বছর আগের সংস্কৃত ভাষার পুঁথিও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসব পুঁথি সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত ২৭জন ব্যক্তি এ গ্রন্থাগারে পুঁথি দান করেছেন। তাদের নামও রয়েছে গ্রন্থাগারে। সময়ের আবর্তে এসব পুঁথিগুলো গ্রন্থাগারের আবদ্ধ ঘরে দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধুলা-বালিতে একাকার পুঁথি-পান্ডুলিপিগুলো।
জানা যায় প্রায় ৩ বছর পূর্বে তৎকালীন ট্রাস্ট কতৃপক্ষের অনুমতিক্রমে চীনের একটি বিশেষজ্ঞ গবেষক দল এ গ্রন্থাগার পরিদর্শনে আসেন। বেশ কয়েকদিন এখানে থেকে গ্রন্থাগারে রক্ষিত অতিপ্রাচীনতম গ্রন্থাবলী থেকে তথ্য-প্রযুক্তিগত উপায় ব্যবহার করে তথা স্ক্যানের মাধ্যমে তাঁদের দরকারি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
কুমিল্লার এ রামমালা গ্রন্থাগারে বহু দুর্লভ বই রয়েছে।
কুমিল্লা শহরের উপকণ্ঠে শাকতলা নামক স্থানে (বর্তমানে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিপরীতে) মূল রামমালা গ্রন্থাগার ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯৫৩ সালে সুদৃশ্য এই ভবনে রামমালা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা এই অঞ্চলে এক বিরাট ঘটনা। শান্ত নিবিড় পল্লীর কোলে আলোয় জ্বলে ওঠে রামমালা। মায়ের নামে ১৯১২ সালে রামমালা গ্রন্থাগার, সেখানে আবার বাবার নামে ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা। ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দেবালয়। ১৯১৯ সালে নিবেদিতা ছাত্রীনিবাস , প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নাটমন্দির। পরের বছর ১৯২৬ সালে রামমালা ছাত্রাবাসের ছাত্ররা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সংবর্ধনা দেয়। সেই ঐতিহ্যবাহী রামমালা গ্রন্থাগারে উপমহাদেশের সুদূর ব্রিটিশ লাইব্রেরি থেকেও গবেষকেরা আসেন। খুঁজে পান তাঁদের দুর্লভ তথ্যটি।
গবেষণা বিভাগে ইসলাম ধর্মদর্শন, বৌদ্ধধর্মদর্শন, খ্রিষ্টানধর্মদর্শন এবং অপরাপর ধর্ম ও দর্শনের বিভিন্ন গ্রন্থ আছে। তা ছাড়া ইতিহাস, বাংলা সাহিত্য ও দর্শনের গ্রন্থ আছে। সাধারণ বিভাগে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ পাঠকের উপযোগী জীবনগ্রন্থ, ইতিহাস, ভ্রমণবৃত্তান্ত, উপন্যাস প্রভৃতি গ্রন্থ ও পত্র–পত্রিকা আছে। পুঁথি বিভাগে সনাতন ধর্ম ও দর্শনের প্রাচীন শাস্ত্র গ্রন্থ ও সংস্কৃতি বিষয়ক হস্তলিখিত গ্রন্থ আছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অর্থের বিনিময়ে এই পুঁথি সংগ্রহ করা হয়েছে।
মানবজীবনে জ্ঞানই শক্তি। অজ্ঞানতাই সর্ববিধ দুঃখের মূল উৎস। তাই জ্ঞান অর্জনের জন্য গ্রন্থাগার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
উপমহাদেশের ঐতিহাসিক এ গ্রন্থাগারটি ঘিরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঈশ্বর পাঠশালা ছাড়াও রয়েছে স্কুল- কলেজ অধ্যয়নরত হিন্দু শিক্ষার্থীদের রামমালা ছাত্রাবাস, রয়েছে নিবেদিতা নামে ছাত্রী নিবাসসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়, রয়েছে বৃহৎ পরিসরে একটি দেবালয় যেখানে কুমিল্লা সহ বহুদূর দূরান্তের ভক্তদের নিত্য সমাগম ঘটে।
মূলত: এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য মহেশ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে ট্রাস্ট বোর্ড রয়েছে। প্রায় ৬ বছর আগে তৎকালীন ট্রাস্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট প্রয়াত ব্যরিস্টার নিখিলেশ দত্তের বিরুদ্ধে দুদকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন কমিটির সেক্রেটারি অধ্যাপক বিমলেন্দু মজুমদার । কমিটির একে অপরকে অভিযুক্ত করার মধ্য দিয়ে তৈরি হয় গ্রুপিং। একে অপরকে বহিষ্কারের লিখিত নোটিশ প্রদান সহ ট্রাস্ট বোর্ডে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তিকরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানান জটিলতা৷ নিজেদের এ অন্তর্কোন্দল বেড়ে মামলায় গিয়ে ঠেকে। এ মামলা প্রথমে নিম্ন আদালত এবং পরে হাইকোর্টে পর্যন্ত গড়ায় । বর্তমানে মামলা চলমান থাকা এবং ট্রাস্ট বোর্ডের এহেন জটিলতায় সদস্যদের যথাযথ পরিচালনা ও যত্নের অভাবে রামমালা গ্রন্থাগারসহ রামমালায় এম ভট্টাচার্য এন্ড কোং নামে একটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ তৈরীর কারখানা ও বিপনন কেন্দ্রটিও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।
অন্যদিকে প্রায় ৪ বছর আগে রামমালা গ্রন্থাগার সংলগ্ন ঐতিহ্য মন্ডিত রামমালা ছাত্রাবাসটির অনধিক ২০ জন ছাত্র থাকার মত জরাজীর্ণ একটি টিনের ঘর প্রার্থনালয় সহ ভেঙ্গে পড়লে ট্রাস্ট বোর্ডের তৎকালীন সদস্য মহানগর আ.লীগ নেতা শিবুপ্রসাদ রায়ের উদ্যেগে ট্রাস্ট বোর্ডের অর্থায়নে একটি কমন শৌচাগার সহ এক তলা টিনশেড পাকা ভবন নির্মান করা হয়। যেখানে ৫০ জন ছাত্র থাকছে । নির্মান শেষে সমসাময়িক কালের প্রথম নির্মিত ছাত্রাবাসের পাকা টিনশেড ভবনটি উদ্বোধন করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিয়োদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার।
রামমালা ছাত্রাবাসটি আরো সম্প্রসারণ এবং অধীক সংখ্যক ছাত্রের আবাসিক সংকুলানের জন্যে ছাত্রাবাসের বিত্তশালী প্রাক্তন ছাত্রদের আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৩ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে প্রার্থনালয় সহ একটি ৩ তলা পাকা ভবন নির্মান কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। যাতে অর্ধশতাধিক ছাত্রের সংকুলান হবে বলে ছাত্রাবাসের এক প্রাক্তন ছাত্র ভবনের নির্মান কাজ দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তাপস দত্ত জানান।
বর্তমানে রামমালা ছাত্রাবাসে মোট ৭২ জন ছাত্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠিত রামমালা ছাত্রাবাসটির প্রতিষ্ঠা, রামমালা গ্রন্থাগারের গবেষণা মূলক শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে একটি যূগলবন্দি হয়ে হয়ে রয়েছে।
প্রাক্তন গ্রন্থাগার পন্ডিত প্রবর রাসমোহন চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ শিষ্য ঈশ্বর পাঠশালার সাবেক শিক্ষক ইন্দ্র কুমার সিংহ সহকারি গ্রন্থাগারিক পদে থেকে দুর্লভ এই গ্রন্থাগার দেখভাল করেছেন। প্রায় ৯০ বছর বয়সে ২০২২ সালের জুন মাসে ইন্দ্র কুমার সিংহের মৃত্যুর পর রামমালা গ্রন্থাগার অনেকটা দেখভাল শূন্য হয়ে পড়ে।
ঈশ্বর পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুধাংশ কুমার মজুমদার জানান, রামমালা গ্রন্থাগারের মূল্যবান বই আর দুর্লভ পুঁথিগুলো পড়ার যেন পাঠক নেই। পাঠকের অভাবে এসব যেনো কেবলই কাগজ। অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হতে যাচ্ছে দুষ্প্রাপ্য পুস্তক আর পুঁথি। আর্কাইভের মতো করে বড় আকারের আধুনিক লাইব্রেবির মাধ্যমে এই গ্রন্থাগারের দুর্লভ পুস্তক ও পুঁথিগুলো সংরক্ষণ করা গেলে অজানাকে জানা আর জ্ঞানার্জনে ভবিষ্যত প্রজন্ম অনেক উপকৃত হবে।
মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্যের কুমিল্লা বাড়ির বৈঠকখানা ঘরে একটি সংস্কৃত স্থাপিত এ গ্রন্থাগারের একটি মূল মন্ত্র ছিল তা হলো- আমাকে অসত্য হতে সত্যে নিয়ে যাও, আমাকে অন্ধকার হতে জ্যোতিতে নিয়ে যাও।
মানবজীবনের ইহাই শাশ্বত প্রার্থনা। তাতে জীবন উজ্জ্বল আলোকিত ও অমৃত হয়।
এ প্রার্থনা ছিল পাঠকদের উদ্দেশে, রামমালা গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্যের। আজ ঐতিহ্যের পীঠে কুমিল্লা রামমালা গ্রন্থাগারের নামের পাশে তাঁর নামও উচ্চারিত হচ্ছে সমানতালে সবার কাছে।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক রাজকুমার মুখোপাধ্যায় লিখে গেছেন, ‘অনেকে মনে করেন, আমেরিকার গ্রন্থাগারের উন্নতির মূলে রয়েছে রাষ্ট্র। কিন্তু তা সত্যি নয়। গ্রন্থাগারের উন্নতির জন্যে যে সামান্য অর্থ ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় করতে হয়, সে অর্থ ব্যয় করতে জনসাধারণ মোটেই বিমুখ হয় না। এর কারণ, জনসাধারণ সেখানে গ্রন্থাগারের মূল্য বোঝে গ্রন্থাগার যে তাদের কতটা প্রয়োজন মেটাতে পারে, সেখানকার জনসাধারণ জানে।’
মানবজীবনে মহৎ উদ্দেশ্যসাধনে যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশ ও জনগণের মঙ্গলের জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য তাঁদের অন্যতম।
হাইকোআদর্শের ওপর নির্ভর করে তিনি নিতান্ত দরিদ্র অবস্থা থেকে জীবন সাধনায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। একদা কঠোর দারিদ্র্যের জন্য লেখাপড়া করার সুযোগ না পেয়ে পরে অর্থ উপার্জন করেন।
এ মহাপুরুষ কুমিল্লা (সাবেক ত্রিপুরা), অধুনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানাধীন বিটঘর গ্রামে ১২৬৫ বঙ্গাব্দে ১৭ অগ্রহায়ণ জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ঈশ্বরদাস তর্ক সিদ্ধান্ত সপণ্ডিত ছিলেন এবং মাতা রামমালা দেবীদেব্য দ্বিজে ভক্তিপরায়ণ সাধ্বী নারী ছিলেন। ‘রামমালা গ্রন্থাগার’ তাঁর অমর কীর্তির মধ্যে অন্যতম। প্রতিষ্ঠাতার মায়ের নামে ১৯১২ সালে জ্ঞানীদের তথা এ অঞ্চলের জ্ঞানপিপাসুদের গবেষণার সুবিধার্থে রামমালা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। মফস্বলের গবেষকদের দরিদ্র ছাত্রদের কল্যাণের জন্য এই প্রতিষ্ঠান বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক চুক্তিমতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এ রামমালা গ্রন্থাগারের পুঁথি বিভাগের প্রায় ২ হাজার ৫০০ পুঁথি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোফিল্ম করা হয়েছে। দেশ-বিদেশের বহু গবেষক রামমালা পুঁথি বিভাগে বিভিন্ন পুঁথির ওপর গবেষণার জন্য আসেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগ্রন্থ এই গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে, যাতে সাধারণ পাঠককের জন্য জীবনচরিত্র গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। পুঁথি বিভাগে প্রাচীন সংস্কৃতি ও বাংলা পুঁথি আছে। পাঠকদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি বা অর্থ গ্রহণ করা হয় না। যেকোনো পাঠক ও গবেষক এই গ্রন্থাগারে অধ্যয়ন করতে পারেন। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
বর্তমানে পুঁথি বিভাগের অমূল্য পুঁথিগুলো (প্রায় আড়াই হাজার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইক্রোফিল্মি করে রাখছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমাদের দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে রামমালা গ্রন্থাগারের অবদান অসীম। গবেষক ও অনুসন্ধানীদের জন্য রামমালা গ্রন্থাগার প্রিয় থেকে প্রিয়। বিখ্যাত ব্যক্তিদের অনেকে এই গ্রন্থাগার থেকে পড়ে গেছেন।