কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য শামীম হোসেন।
বিবর্তন ডেস্ক: চান্দিনায় সংবাদকর্মীদের অস্থায়ী কার্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদকর্মীকে মারধর করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলা পোস্ট অফিসের সামনে উপজেলা সংবাদকর্মীদের অস্থায়ী কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। এতে দৈনিক কালবেলার চান্দিনা প্রতিনিধি আকিবুল ইসলাম হারেছ এবং দৈনিক মুক্ত খবর পত্রিকার চান্দিনা প্রতিনিধি সোহেল রানাকে মারধর করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য তার সমর্থকরা।
অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য ও আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী হাজী শামীম হোসেনের নেতৃত্বে অফিসে প্রবেশ করে ৫/৬ জনের একটি দল। দোতলা ভবনের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠেই প্রথমে কার্যালয়ে কর্মরত সংবাদকর্মী সোহেল রানার উপর হামলা চালায় তারা।
জানা যায়, দেয়ালে আগে থেকে লাগানো পোস্টারের উপরে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতার সহযোগীদের হাজী শামীমের পোষ্টার সাঁটানো নিয়ে বাঁধা দেয়া হলে ক্ষিপ্ত হন শামীমের এ সহযোগীরা। । এর পর সহযোগীদের খবর পেয়ে সংবাদকর্মীদের এ কার্যালয়ে আসেন শামীমের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা। সেখানে গিয়ে তারা সংবাদকর্মী সোহেল রানা ও আকিবুল ইসলাম হারেছ কে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এসময় ভুক্তভোগীরা বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করলেও তাদের হত্যার হুমকিও দেন শামীম।
জানা যায়, হাজী শামীম এক সময় বিএনপি সমর্থিত নেতা হলেও বর্তমানে তার বন্ধু স্থানীয় সংসদ সদস্যের এপিএস সমির দত্তের প্রভাব খাটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হিসেবে নিজেকে দাবি করেন।নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এই শামীমের হাতে মারধরের শিকার হন অনেক আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগ নেতা।তবে তারা মান-সম্মানের ভয়ে মুখ খুলছেন না বলে জানা যায়।
হামলার শিকার সাংবাদিক সোহেল রানা বলেন, “আমি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় দেখি চারজন কিশোর কে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন এর পোষ্টারের উপর হাজী শামীমের পোষ্টার লাগাচ্ছে। আমি ও সাংবাদিক হারেছ তাদেরকে পোষ্টারের উপর পোষ্টার না লাগিয়ে নিচে ফাঁকা জায়গায় লাগাতে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তারা। এক পর্যায়ে এক কল করে ৬/৭ জন কিশোর এনে আমাদের উপর চড়াও হয়।পরক্ষণে আমরা অফিসে গেলে শামীম ও তার সহযোগিতারা অফিসে ঢুকে আমাদের এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে শামীম ও তার ভাতিজা রাশেদ মেরে ফেলার হুমকি দেয়।”
এ বিষয়ে শামীম হোসেন জানান, এক পোষ্টারের উপর আরেকজনের পোষ্টার লাগানো নিয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে ওই পোষ্টার লাগানো কর্মীদের বাক বিতন্ডা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমি শুধু সংবাদকর্মীদের বলেছি, আপনারা কেন ভিডিও করেছেন? কেউ তো অভিযোগ করেনি। পরে কিংকর ভাইয়ের অফিসে গিয়ে এটা সমাধান করেছি। দুই সংবাদ কর্মীর কাছে দু:খ প্রকাশ করেছি। আমাদের মাঝে হাসিখুশি কথাবার্তা হয়েছে। আমার লোক কাউকে মারধর করেনি। আর আমিও তাদেরকে হুমকি দেইনি। অভিযোগ ভিত্তিহীন।