সৌরভ লোধঃ
কুমিল্লা নগরীর ময়লা আবর্জনার ভাগাড় (ডাম্পিং স্টেশন) থেকে আবর্জনা পরিশোধন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ।
এতে শহরতলী ও জগন্নাথপুর এলাকার অর্ধলক্ষ মানুষ তিন দশকের বিষাক্ত দুর্গন্ধের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে। রক্ষা হবে পরিবেশ দূষণ।
গতকাল রবিবার (৯ জুন) দুপুরে সরজমিনে শহরতলীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ঝাকুনিপাড়া এলাকায় ল্যান্ডফিল পরিদর্শন করেছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। এসময় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুন নাহার,নির্বাহী প্রকোশলী আবু সায়েম ভূঁইয়া, মোঃমাঈন উদ্দিন চিশতী সহ কাউন্সিলর ও অন্যান্য কর্মকর্তা, কাউন্সিলরবৃন্দ,স্থানীয় জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুন সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেন, ‘আমরা ময়লা থেকে পরিবেশ বান্ধব শক্তি উৎপন্ন করব। ময়লার দূগর্ন্ধে এ এলাকায় দেড়লক্ষ মানুষ বসবাস করতে বিব্রতবোধ করে। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় আমরা ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ও ওয়েস্ট এনার্জি নামে দুটি পরিকল্পনা নিয়েছি। ময়লা বিদুৎ শক্তিতে রূপান্তর হবে। এ বিদুৎ শক্তি রাষ্ট্রের কাজে ব্যবহার হবে এবং মানুষ দূর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাবে। আমরা কাগজে কলমে দেখতে পারতাম, তা না করে আমরা প্র্যাক্টিক্যাল অবস্থাটা দেখে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছি,সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা সেই অনুসারে কাজ করবে’।
এসময় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। একসময় যে জায়গাটা ময়লার খোলা বা ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে সেই ময়লা থেকে একসময় বিদুৎ উৎপাদন হবে। আমরা কিভাবে কাজ করব সে সুপরিকল্পনা করতেই এখানে সরজমিনে এসেছি।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা নগরী থেকে বিবির বাজার স্থলবন্দর সড়ক। এ সড়কের সীমান্তবর্তী দৌলতপুর-ঝাঁকুনিপাড়ায় তিন দশক থেকে ফেলা হচ্ছে সিটি কর্পোরেশেনের প্রতিদিনের আবর্জনা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) এলাকার হাটবাজার ও বাসাবাড়ির ময়লা, কঠিন, তরল, গ্যাসীয়, বিষাক্ত ও বিষহীন বিভিন্ন বর্জ্য ফেলার ভাগাড় থেকে (ডাম্পিং স্টেশন) দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষণে নাকাল হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২টি গ্রামের বাসিন্দা। ঐ ভাগাড়ে আগুনে পোড়ানো আবর্জনার ধোঁয়া ও পচা বর্জ্যের বিষাক্ত দুর্গন্ধে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। দিন দিন আবর্জনা আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। এসব বর্জ্যের দুর্গন্ধে শ্বাসকষ্ট, চর্ম ও ডায়রিয়াসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। আবর্জনা পরিশোধন করা হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
স্থানীয় জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বর্জ্যের দুর্গন্ধ ও আগুনে পোড়ানো ধোঁয়ায় ভাগাড়স্থলের আশপাশের তিন-চার কিলোমিটার এলাকার প্রায় ২২টি গ্রামের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ময়লা-আবর্জনা ও বিষাক্ত ধোঁয়ার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এখানে আধুনিক পদ্ধতিতে বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করার যে উদ্যেগ এমপি ও মেয়র মহোদয় নিয়েছেন এতে এলাকার মানুষ খুশি। এটা এলাকাবাসীরও দীর্ঘদিনের দাবি।’