বিবর্তন রিপোর্ট:
স্কুল জীবনে কষ্টের জমানো ৩০ টাকা পকেটে নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে লক্কর- ঝক্কর লোকাল বাসে চড়ে বা পায়ে হেটে, অথবা সাইকেলে চড়ে কুমিল্লা নগরীর একমাথা টমসন ব্রীজ পৌঁছি। টমছন ব্রীজ থেকে ফুটপাতের বালি -কংকরের উপর দিয়ে হেঁটে কান্দিরপাড়ে আসা। নগরীর কান্দিরপারের দিপীকা অথবা লিবার্টি তারপরে মনোহরপুরে রুপকথা সবশেষ ছাতিপট্টির ঐ সময়ে নতুন হল মধুমতি হল। সিনেমা হলের সামনে এসে ভীর ঠেলে দেয়ালো ঠাসানো সিনেমার পোস্টার দেখে কিছুটা আগাম স্বাধ নিয়ে নেয়া হতো। পরে নাম চূড়ান্ত করে সিনেমা দেখবো বলে বুথে বা এক রকম জোড়াজুড়ি -কাড়াকাড়ি করে ব্ল্যাকে সংগৃহীত টিকেট নিয়ে হলে প্রবেশ। অন্ধকার হলের ভিতর সুপারভাইজার টর্সলাইটের মৃদু আলোতে আসন দেখিয়ে নির্দিষ্ট করে দিলে সিটে বসা।
সিনেমা শুরুর অপেক্ষায় পর্দায় অপলক দৃষ্টি। প্রথমেই সিনেমা শুরুতে সিনেমার পর্দায় যথারীতি অভিনয়শিল্পীসমেত কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্টদের নাম প্রদর্শণ। বলে রাখা ভাল, শুরুতে না হলেও সিনেমার মাঝামাঝি সমটাতে গায়ে পরা জামাকাপড় ভিজে একাকার, সাথে ছাড়পোকার বিষক্রিয়া যেন আনন্দ বিনাস করা এক বিরক্তিকর প্রতিযোগিতা।
সময়ের বিস্তর ব্যবধানে কুমিল্লা নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়, দীপঙ্কর দীপন এর পরিচালনায় নির্মিতব্য ‘ছাত্রী সঙ্ঘ’ সিনেমার অভিনয় শিল্পীদের চূড়ান্ত বাছাই পর্ব। আনুষ্ঠানিকতায় চূড়ান্ত নির্বাচিতদের সনদ বিতরণ করা। আর এসবের মধ্যে ঘটে কুমিল্লার উঠতি বয়সের সংস্কৃতিসেবী নবাগত অভিনয় শিল্পীদের যাবত কালের অভূতপূর্ব সম্ভাবনা।
হলের বড় পর্দায় স্বল্প দৈর্ঘ বা পূর্ণদৈর্ঘ সিনেমা দেখা, পরে বন্ধুদের অনুভূতি ব্যক্ত করা বাংলার -বাংলাভাষাভাষীর একটি প্রথাগত বিষয়।
বাংলা সিনেমার আকালের ঠিক এ সময়ে ‘২৪ এর মাঝামাঝি তে আমার প্রতিবেশী, আমাদের কুমিল্লা জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জুনিয়র -সিনিয়র শিক্ষার্থী আমার ভাই – বোন, আমার সন্তানতূল্য একটি মিশ্রিত দল নির্দিষ্ট একটি ছবিতে অভিনয় করার প্রয়াশে শুধুমাত্র ২/ ৩ মাসের প্রশিক্ষণ শেষে শ্যুটিং করে ১০ জনের ও অধিক অভিনয় শিল্পী ‘ছাত্রীসঙ্ঘ’ ছবিটিতে পূর্ণরূপায়নে নিপূন দক্ষতার সাথে অভিনয়ে অসীম কৃতীত্ব দেখাবে তা যে অবাক হওযার বিষয় এতে কারো দ্বি-মত থাকার কথা নয়।
রজত ফিল্ম এর “ছাত্রী সংঘ” নামে এই সিনেমার জন্যে মেধা অন্বেষণের সফল অভিযানে অভিনয়শিল্পী নির্বাচন করে তাদের সুনিপুণ প্রশিক্ষণ দিয়েএমনি একটি আনুষ্ঠনিকতা আমাদের সামনে আনতে সক্ষম হন দেশের খ্যতিমান চলচ্চিত্রনির্মাতা দীপঙ্কর দীপন।
তারই ধারাবাহিকতায়র গত ৯ জুন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের চূড়ান্তপর্বে অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা চিত্রায়িত দৃশ্য প্রদর্শনপূর্বক ফলাফল ও সনদ প্রদান করার মধ্যদিয়ে সূদুর সম্ভাবনার নিশ্চিত প্রতিফলন ঘটান হল ভর্তি কুমিল্লার লালিত সংস্কৃতিধারক বাহক দর্শক সূধীজনের এ অনুষ্ঠানে।
যার সবটকুই যার প্রানান্ত চেষ্টার ফল তিনি হলেন থ্রিলার চলচ্চিত্র ‘ছাত্রী সংঘ’র পরিচালক দীপঙ্কর দীপন।
কুমিল্লা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেধা অন্বেষণের মাধ্যমে অভিনয় শিল্পী নির্বাচিত করে কুমিল্লার বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তী শান্তি-সুনীতি এবং মুছে যাওয়া ইতিহাসের নেপথ্যের মহানায়িকা প্রযুক্ত নলিনী ব্ৰহ্মকে নিয়ে নির্মিতব্য চলচ্চিত্র এ সিনেমা ‘ছাত্রী সংঘ’।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান এবং পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার) এর পরিকল্পনা ও অনুপ্রেরণায় রজত
ফিল্মস নির্মাণ করছে ঐতিহাসিক থ্রিলার সিনেমা ‘ছাত্রী সংঘ’।
‘ছাত্রী সংঘ’ নির্মিতব্য এ সিনেমার মাধ্যমে কুমিল্লার বাছাইকৃত মেধাবী অভিনয় শিল্পীরা যেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে অবস্থান তৈরি করতে পারে সে অভিপ্রায়ে রজত ফিল্মস ‘২৪ এর ১১থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক বাছাই এবং ১৭থেকে ১৯ মে পর্যন্ত স্ক্রিন অভিনয়ের প্রস্তুতি বিষয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী কোর্স এর আয়োজন করা হয়। এই প্রশিক্ষণে তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পেশাদার শুটিং ও সম্পাদনার মাধ্যমে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় এ সম্ভাবনা ময় অভিনয় শিল্পীদের মাঝে।
দীপংকর দীপন এই সিনেমো ও মেধা অন্বেষণ
কাক্রমের উদ্দেশ্য ও কর্মপদ্ধতি বর্ণনা করতে গিয়েছাত্রীসং বলেন, ‘এখানে মেধা অন্বেষন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তিনটি ক্যাটাগরিতে –প্রথমত: কুমিল্লার মূল প্রতিযোগি, দ্বিতীয়ত: কুমিল্লা জেলার বাইরের প্রতিযোগি, তৃতীয়ত: অনুর্ধ্ব ১৮ বছর, এই তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ২০ জনকে ছাত্রী সংঘ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রের জন্য চূড়্ন্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
কুমিল্লা ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানটিতে বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লার মেয়র ডা. তাহসিন বাহার, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান এবং জেলা পুলিশ সুপার জনাব আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার) এছাড়া, রজতফিল্মস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রযোজক জনাব শাহেদ শাহরিয়ার প্রমূখ।
এই বিষয়ে ছাত্রী সংঘ সিনেমার পরিচালক দীপংকর দীপন আরো বলেন, যেহেতু কুমিল্লার ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে ছাত্রী সংঘ সিনেমাটি তৈরী হচ্ছে তাই আমরা চাই এই সিনেমা কুমিল্লায় হোক কুমিল্লার অভিনয় শিল্পীদের কাছে তাদের স্বপ্ন পূরনের মাধ্যম। তাই আমরা আয়োজন করেছি TALENT HUNT এর,
শুধু আমরা অডিশন নিয়ে ক্ষান্ত থাকিনি আমরা SHORT COURSE ON SCREEN ACTING এর
মাধ্যমে তাদের প্রস্তুত করে চুড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়াটি করেছি। আমাদের প্রত্যাশা কুমিল্লার অভিনয়শিল্পীদের পর্দার অভিনয়ের জন্য প্রস্তুত করা এবং তারকা শিল্পীদের সাথে উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাস্ট করা। সেপ্টেম্বরে শুরু হবে এই সিনেমার চিত্রগ্রহণ। এখন চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্ব। ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্রী সংঘের মূল তারকা শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে’।