বিবর্তন রিপোর্টঃ
প্রাথমিক প্রেসেসিং ছাড়া এবারের কোরবানির কোন চামড়া কুমিল্লা থেকে ঢাকায় যেতে পারবেনা।
স্থানীয় ভাবে ৭ -১০ দিন চামড়া সংরক্ষণ করবে কুমিল্লার এ কাজে সংশ্লিষ্ট স্থানীয়া। কোরবানির
কোন চামড়া যেন নষ্ট না হয় সেদিকে
সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। এটি জাতীয়
সম্পদ। আমরা এটা সুন্দরভাবে বৈদেশিক
বাণিজ্যের জন্য প্রস্তুত রাখব।
আসন্ন কোরবানি ঈদে পশু কোরবানি এবং পরবর্তীতে পশুর চামড়া সংরক্ষণ, ডিম ও মশলাজাতীয় পন্যসামগ্রীর মূল্যের উর্ধগতি প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
গত বৃহস্প্রতিবার(১৩ জুন)কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনারে তিনি জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন।
তিনি চামড়া ব্যবসায়ীসহ চামড়া সংরক্ষনকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বলেন, ব্যবসায়ীদের অনেক সমস্যা আছে সেগুলো আমরা আস্তে আস্তে সমাধান করবো’। তিনি বলেন, আপনারা যদি কোরবানির পর চামড়াটা একসাপ্তাহ সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন
তাহলে যথাযথ মূল্য পাবেন। আর রাতারাতি এ চামড়া
যদি আপনারা ঢাকায় পাঠিয়ে দেন তাহলে
যথাযথ মূল্যটা পাবেন না। কিছু মাদরাসায়
আমরা ফ্রী লবনের জন্য ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
এবার দেশে লবণের বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। লবণ
নিয়ে কোনো টেনশন নেই। কম দামে লবণ
পাবেন আপনারা। সেমিনারে সাংবাদিকসহ উপস্থিত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক পরামর্শমূলক বক্তব্যে তিনি জানান, কোরবানির এ চামড়া আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। জেলা ও মহানগরে চমড়া সংরক্ষণের জন্যে ইমাম সমিতি, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে চামড়া সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সভা করেছেন। চামড়া অবশ্যই শেডের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে । আগামী জুমায় ইমাম সাবেরা খুতবায় চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে বলবেন। প্রত্যেক উপজেলায় দুই থেকে তিনটা জায়গায় চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। সে বিষয়ে আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। খোলা জায়গায় কোনোভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা যাবে না। অবশ্যই শেডদেওয়া স্থানে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে।
সভায় ‘ক্যাব’ কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসউদ বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এ চামড়া যথাযথ ব্যবস্হাপনার অভাবে রপ্তানি হচ্ছে না। তাই যথাপোযুক্ত মূল্যও পাচ্ছে না চামড়া সংরক্ষণকারী সহ বিক্রেতারা। সরকার গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছেন মফস্বল এলাকায় ৫০- ৫৫ এবং শহরে ৫৫- ৬০ টাকা। এর ফলে দুই – তিন লক্ষ টাকায় কেনা গরুর চামড় বিক্রি করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩- ৪শ টাকায়।স্হানীয় পর্যায়ে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় জনগণ এই সম্পদটির প্রতি তেমন যত্নশীল নয়, দেশে চামড়া রপ্তানির এল ডাব্লিউ জি লাইসেন্স ছিল মাএ দুটি। এ বছর আরো ৪ টি লাইসেন্স নতুন করে দেয়া হয়েছে। তিনি ক্যাবের পক্ষ থেকে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে রপ্তানির পথ প্রসারসহ কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান ।
সেমিনারে উপস্থিত চামড়া একজন আড়তদার বলেন,একটি চামড়ার জন্য ১০ কেজি লবণ লাগে । সরকারি কোনো সহায়তা আমরা পাই না ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকেও কোনো সহায়তা আমাদের করা হয় না। আমরা চামড়া বিক্রি করি ট্যানারি মালিকদের কিন্তুসেটার কোনো কাগজপত্র নেই। তারা আমাদের কোনো ডকুমেন্টস দেয় না। আমরা ব্যবসায়ীরা খুবই অবহেলিত। চামড়া কোথায় বিক্রি করছি সেটার খবর
কেউ রাখে না । আমরা চাই সুনির্দিষ্ট একটি গণ্ডির মধ্যে চামড়া ব্যবসা চলে আসুক ।
জেলা প্রশাসক খন্দকার মুঃ মুশফিকুর
রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক এম এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ,ক্যাব কুমিল্লা সভাপতি ও বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান আখলাক হায়দার, কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক কালবেলা কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান, বিবর্তন সম্পাদক অধ্যাপক দিলীপ মজুমদার, কাজী চেম্বার অব কমার্সের জামাল আহাম্মেদ,ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুল ইসলাম, বিসিক কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো: মুনতাসীর মামুন প্রমুখ।