বিবর্তন রিপোর্টঃ
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে কোরবানির চামড়া বোঝাই ট্রাক দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে আজ ঈদের দিন সন্ধ্যার পর থেকে শতাধিক গরুর চামড়া বোঝাই ট্রাক দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
কতৃক বাঁধাপ্রাপ্ত হয়।
লবন মাখানো সহ প্রাথমিক পরিচর্যা ছাড়াই কুমিল্লা জেলা সহ বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানি গরুর চামড়া বোঝাই করে শতাধিক ট্রাক ঢাকার উদ্যেশ্যে নেয়া হচ্ছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও চামড়া সংরক্ষণকারীর চাহিদা উপেক্ষা করে এবং জেলা – উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কোরবানির চামড়া ঢাকা নেয়া হচ্ছিল।
এবারের কোরবানি ঈদে পশু কোরবানি এবং পরবর্তীতে পশুর চামড়া সংরক্ষণ, ডিম ও মশলাজাতীয়পন্যসামগ্রীর মূল্যের উর্ধগতি প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় গত বৃহস্প্রতিবার(১৩ জুন)।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক সেমিনারে চামড়া ব্যবসায়ীসহ চামড়া সংরক্ষনকারীদের স্বার্থে চামড়া রাতারাতি ঢাকায় পাঠিয়ে না দিয়ে কোরবানির পর চামড়া একসাপ্তাহ সংরক্ষণ করে রেখে যথাযথ মূল্য পাবার ক্ষেত্রে সেমিনারে মত প্রকাশ করা হয়। সভায় কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক মাদরাসায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য ফ্রী লবনের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান।
সেমিনারে সাংবাদিকসহ উপস্থিত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক পরামর্শমূলক বক্তব্যে তিনি জানান, কোরবানির এ চামড়া আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। জেলা ও মহানগরে চমড়া সংরক্ষণের জন্যে ইমাম সমিতি, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে চামড়া সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সভা করেছেন। চামড়া অবশ্যই শেডের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে । আগামী জুমায় ইমাম সাবেরা খুতবায় চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে বলবেন। প্রত্যেক উপজেলায় দুই থেকে তিনটা জায়গায় চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। সে বিষয়ে আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। খোলা জায়গায় কোনোভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা যাবে না। অবশ্যই শেডদেওয়া স্থানে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে
সভায় ‘ক্যাব’ কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসউদ বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এ চামড়া যথাযথ ব্যবস্হাপনার অভাবে রপ্তানি হচ্ছে না। তাই যথাপোযুক্ত মূল্যও পাচ্ছে না চামড়া সংরক্ষণকারীরা। সরকার গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছেন মফস্বল এলাকায় ৫০- ৫৫ এবং শহরে ৫৫- ৬০ টাকা। এর ফলে দুই – তিন লক্ষ টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩- ৪শ টাকায়।স্হানীয় পর্যায়ে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় জনগণ এই সম্পদটির প্রতি তেমন যত্নশীল নয়, দেশে চামড়া রপ্তানির এল ডাব্লিউ জি লাইসেন্স ছিল মাত্র দুটি। এ বছর আরো ৪ টি লাইসেন্স নতুন করে দেয়া হয়েছে। তিনি ক্যাবের পক্ষ থেকে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে রপ্তানির পথ প্রসারসহ কার্যকরী পড়দক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান ।
সেমিনারে উপস্থিত চামড়া একজন আড়তদারের একটি চামড়ার জন্য ১০ কেজি লবণ লাগে । সরকারি কোনো সহায়তা আমরা পাই না তারা। ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকেও কোনো সহায়তা তকদের করা হয় না বলে জানান।
এদিকে চামড়া বিক্রয়োত্তর ট্যানারি মালিকরা কাগজপত্র বা কোন৷ ডকুমেন্ট দেয় না।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার উপপরিচালক এম এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ,ক্যাব কুমিল্লা সভাপতি ও বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান আখলাক হায়দার, ক্যাব কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসউদ,, কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক কালবেলা কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান, বিবর্তন সম্পাদক অধ্যাপক দিলীপ মজুমদার, কাজী চেম্বার অব কমার্সের জামাল আহাম্মেদ,ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুল ইসলাম, বিসিক কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো: মুনতাসীর মামুন প্রমুখ।