সৌরভ লোধ ||
ভক্তি, আনন্দ আর আধ্যাত্মিকতার এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে দামোদর মাসের মহা নগরকীর্তন। শুকবার (৭ নভেম্বর) ভোর থেকে শুরু হয়ে পুরো সকালজুড়ে চলা এ ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেন শতাধিক ভক্ত, শিশু-কিশোর ও স্থানীয় অধিবাসী।
দামোদর মাসের শুভ দিনে রাধাকৃষ্ণের নামগানে মুখরিত হয় কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার নলুয়া চাঁদপুর গ্রাম। রাধাকৃষ্ণ সংঘের আয়োজনে এবং নলুয়া চাঁদপুর গীতাস্কুলের সহযোগিতায় এ নগরকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়া আর শঙ্খধ্বনির সঙ্গে গ্রামের শীতলা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে যাত্রা শুরু করে কীর্তনদল। ঢোল, করতাল, বাঁশি আর ভক্তিসঙ্গীতের তালে তালে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে আবার ফিরে আসে শীতলা মন্দিরে। পথে পথে ঘরে ঘরে ভক্তরা প্রসাদ বিতরণ করেন, কেউ কেউ ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে ভক্তদলের অভ্যর্থনা জানান।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে রাধাকৃষ্ণ সংঘের সভাপতি নয়ন ভৌমিক বলেন,দামোদর মাসে নগরকীর্তন আমাদের গ্রামের অন্যতম ঐতিহ্য। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি ও প্রেম জাগিয়ে তুলতে আমরা প্রতিবছর এই আয়োজন করি। এই কীর্তনের মাধ্যমে গ্রামজুড়ে একতা, ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রাধাকৃষ্ণ সংঘের সদস্য সুশান্ত লোধ বলেন,ভোরের সূর্য ওঠার আগেই যখন শঙ্খধ্বনি আর ঢোলের আওয়াজ কানে আসে, তখন মনে হয় আজকের দিনটা যেন আলোকিত হয়ে উঠেছে ভক্তির আলোয়।
কীর্তন শেষে অনুষ্ঠিত হয় রাধাকৃষ্ণের বিশেষ আরতি ও সমবেত প্রার্থনা। পরে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
আয়োজকদের ভাষায়, দামোদর মাস হলো আত্মশুদ্ধি ও প্রেমের প্রতীক মাস। এই মাসে নগরকীর্তনের মাধ্যমে ভক্তরা ভগবানের প্রেমলীলার স্মরণ করে আত্মার পরিশুদ্ধি খোঁজেন।
এদিন পুরো নলুয়া চাঁদপুর গ্রাম ভরে ওঠে ভক্তির সুরে, ফুলের সুবাসে আর মানুষের হাসিতে। উৎসব শেষে অনেকের মুখে একটাই কথা— এই নগরকীর্তন শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের গ্রামীণ ঐক্য ও ভক্তির প্রতীক।
