নিজস্ব প্রতিনিধি ||
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার উত্তর দিঘলী গ্রামের এক প্রবাসীর বসতবাড়িতে অকটেন ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী কেফায়েত উল্লাহ (৪৫) ও তার দুই ছেলে ফজলে রাব্বি (২২) ও রায়হান উদ্দিনের (২০) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন বাড়ির মালিক আঃ মান্নান (৭৮)। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে বরুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৩ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বাদীর ছেলের কামালের বসতবাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের পাশেই সেদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল হালিমাতুস সাদিয়া (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিল। আলেম-ওলামাদের আপ্যায়ন শেষে পরিবারের সদস্যরা বাইরে অবস্থান করায় ঘর ফাঁকা ছিল সেদিন।এ সুযোগে পূর্ববিরোধের জেরে কেফায়েত উল্লাহ ও তার দুই ছেলে বসতবাড়িতে প্রবেশ করে তিনটি রুমে অকটেন ঢেলে গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন লাগায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। পাশের ঘরে থাকা আঃ মান্নানের স্ত্রী দরজার ফাঁক দিয়ে তাদের চিনতে পারেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
আগুনের খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা প্রথমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। পরে বরুড়া ফায়ারসার্ভিস এসে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ঘরে থাকা বক্স খাট, সোফা, আলমারি, টেবিল-চেয়ার, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, প্রায় ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা পুড়ে যায়।
আঃ মান্নান জানান, ২০২২ সালে আমার ছেলে কামালকে অপহরণ করে মারধর করে বাড়ির সামনে ফেলে যায় কেফায়েত। সে ঘটনায় মামলা দিয়েছিলাম। পরে সে জামিনে বের হয়।মামলা টা এখনো চলমান।সে আবারো আমাদের ক্ষতি করল। আগুনে সব শেষ হয়ে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আবু হানিফ বলেন, আগে মাছ মারা নিয়ে মিথ্যা মামলা করেছিল কেফায়েত। তদন্তে প্রমাণ হয়নি, মামলা খারিজ হয়। এরপর থেকেই আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সে। সুবিধাবাদী স্বভাবের মানুষ—যে দল ক্ষমতায় থাকে তার সঙ্গেই থাকে। তিনি ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেফায়েত উল্লাহ বলেন,শত্রুতা থাকলেও কেউ বিশ্বাস করবে না যে আমি ঘর পুড়াবো। বরং আগুনের খবর শুনে আমি ও আমার দুই ছেলে গিয়ে পানি ঢেলে নিভানোর চেষ্টা করেছি। এতেই উল্টো দোষী বানানো হচ্ছে। তারা ধনী মানুষ, আমাদের বিরুদ্ধে যেকোনো কিছুই করতে পারে।
বরুড়া ফায়ারসার্ভিসের সাব-অফিসার আনিছুর রহমান বলেন, আমরা গিয়ে দেখি স্থানীয়রা আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পরে আমরা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করি।
এ বিষয়ে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী নাজমুল হক বলেন,অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত শুরু হয়েছে।তদন্তে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
