নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে ইউপি কার্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন ১৮হাজার মানুষ। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার উত্তর শিলমুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দারা মানববন্ধনে এই দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার লালমাই-বরুড়া সড়কের বরুড়া উপজেলার উত্তর শিলমুড়ি ইউনিয়নের দীঘলগাঁও এলাকায় এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে ই্উনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু ইসহাক বলেন, বর্তমান ইউ পি কার্যালয় ইউনিয়নের এককোনে রয়েছে। এখন ইউনিয়নের ইউপি অফিসটি মধ্যবর্তীস্থান দীঘলগাঁওয়ে কার্যালয় স্থাপনের দাবী করছি। ওই স্থানটি সড়ক ঘেষা হওয়ায় পূর্বাঞ্চলসহ ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৮ হাজার মানুষ উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি। তিনি আরো বলেন,বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ইউনিয়নের এক কোনে নিজ গ্রামে কার্যালয়টি নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টায় রত আছেন। সেখানে পিরো ইউনিয়নের শুধুমাত্র ৬ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন। তাছাড়া যাতায়াতের সুবিধা না থাকায় অসুবিধায় পড়বেন ১৮ হাজার মানুষ। আমরা এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানিয়েছি।
এই সময় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির,সাবেক সদস্য অঞ্জলী রানীসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুস সালাম দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী, স্থানীয় প্রতিনিধিরা স্থানীয় এমপি, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, বরুড়া নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ প্রেরণ করেন।
দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়,কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা ১০নং শিলমুড়ী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী মো: আব্দুস সালাম পরিত্যক্ত ঘোষনা না করে হস্তান্তর করার পায়তারা করছে। পরিত্যাক্ত হওয়া বা না হওয়া মর্মে অফিসে কোন ধরনের মিটিং, রেজুলেশন কিংবা জেলা অথবা উপজেলা থেকে কোন নির্দেশনা নাই। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম একান্ত ব্যাক্তিগত পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজের এলাকায় একটি আধাপাকাঘর বাটোয়ারা মামলাযুক্ত (মামলা- ৭৭/২০০৫) কৃষিজমিতে নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মাণ চলমান অবস্থায় বর্তমান অফিসের সকল মালামাল ব্যাক্তিগত সম্পত্তির মতো সদস্যদের সাথে মিটিং/পরামর্শ ব্যাতিত অফিশিয়াল সিদ্ধান্তের বাইরে যেয়ে নির্মান চলমান ঘরে স্থানান্তর করে। এই এলাকাটি বরুড়া কুমিল্লা সড়ক থেকে ১.৫ কি.মি ভিতরে এবং ইউনিয়ন এর একপাশে অবস্থিত হওয়ায় পূর্বাঞ্চলের ৮হাজার এর উপর ভোটার সহ অধিকাংশরা ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখিন হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান পশ্চিমাঞ্চলের ৮ হাজার ভোটারকে সুবিধা দিতে গিয়ে পূর্বাঞ্চলের মানুষকে বঞ্চিত করছেন। পূর্বাঞ্চল: পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বর্তমান অফিসটি ৫.৫কি.মি দূরে অবস্থিত।
অন্যদিকে মানববন্ধনে এলাকাবাসী আরও বলেন- চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সালাম নিজের সিদ্ধান্তে ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। এলাকায় নির্বাচিত ইউপি মেম্বারদের না জানিয়ে এডিপি, উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, কাবিখা, কাবিটা, টিআর সহ ইউনিয়ন পরিষদের যত বরাদ্দ আসছে তা মাসিক সভায় উপস্থাপনও করেন না। তাছাড়া কয়েক মাস যাবত টিসিবির কার্ড এবং মাতৃত্বকালিন ভাতা আসছে কিন্তু কোথায় কিভাবে কাকে দেওয়া হচ্ছে তা মেম্বারা অবগত নন। গত শীতে শীত বস্ত্র বিতরনেও চেয়ারম্যান তার নিজের লোকের মাধ্যমে তা বিতরণ করেণ। গ্রাম আদালতের বিচার কাজ আইন অনুয়ায়ী করা হয় না মেম্বারের অজান্তে চেয়ারম্যানের লোকদিয়ে বিচার কাজ করে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন- অধিকাংশ সময়ই চেয়ারম্যান দেশের বাহিরে থাকেন যার ফলেএলাকাবাসী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিতহতে দেখা দেয়।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নু-এমং মারমা মং এ বিষয়ে বলেন, ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার উপপরিচালক মহোদয় প্রস্তাবিত দুই স্থান পরিদর্শন করেছেন। জনগণের সুবিধার্থে মধ্যবর্তী স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় স্থাপন হলে ভালো হয় বলে আমরা মনে করি। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।