ছবি: মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ও ধামঘর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়া খিড়া নদীর গতিরোধে নির্মিত মাটির বাঁধ।
বিবর্তন রিপোর্ট :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নদীর গতিপথ রোধ করে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে।
উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের দারোরা-কৃষ্ণপুর সড়কের কাজিয়াতল পূর্ব পাড়া জব্বার হাজীর বাড়ির পাশের খিড়া নদীর গতিপথ রোধ করে মাটির এ বাঁধ নির্মাণের ফলে চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কৃষি জমির সেচ কাজ।
ফসলি জমিতে ভেকু মেশিন বসিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট গভীরে গর্ত খুড়ে মাটি কেটে নিচ্ছে ওই ক্ষমতাধর প্রভাবশালী মহলটি। এতে হুমকিতে পড়েছে ওই ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন জানার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্থানীয় সুশীল সমাজ ও কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দারোরা ও ধামঘর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গেছে খিড়া নদী। এক সময় এ নদী দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী শত শত নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করতো। বর্তমানে দারোরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি মাটিখেকো সিন্ডিকেট নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধের ওপর দিয়ে প্রতিদিন ৮/১০টি ট্রাক্টর কৃষি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি জোগান দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, কৃষি কাজই আমাদের প্রধান পেশা। এ কাজ করেই আমরা জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। এরা যে ভাবে কৃষি জমি নষ্ট করছে, তাতে কিছুদিন পর আমরা আর জমি খুঁজে পাব না। প্রশাসন যদি এখনই কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই জমির মালিক আমার ভাই। সে বিদেশ থাকে। জমিগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে আমি রয়েছি। ভাই নিজেই মাটি বিক্রি করেছে।
ভারপ্রাপ্ত মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক বিষয়। মাটির বাঁধ নির্মানের বিষয়টি খবর নিয়ে খুব দ্রুত নদীটি খুলে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।